নতুন কোটা পদ্ধতি ২০২৪

নতুন কোটা পদ্ধতি ২০২৪

আজকে আমাদের আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হল নতুন কোটা পদ্ধতি সম্পর্কে। এই পোস্টে আপনারা কোটা সম্পর্কে সকল কিছু জানতে চলেছেন। এছাড়াও আমরা কোটা কি?, বাংলাদেশে কোটা পদ্ধতি কি?, সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি, কোটা কত পারসেন্ট, মুক্তিযোদ্ধা কোটা কত পার্সেন্ট, প্রতিবন্ধী কোটা কত পার্সেন্ট, বিস্তারিত জানতে পারবেন জানতে এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংক সকল জেলার সুইফট কোড 2024

কোটা কি ?

সুবিধা বঞ্চিত বা অনগ্রসর জাতিকে এগিয়ে আনার জন্য দেশের বিভিন্ন খাতে সুযোগ সুবিধা করার মাধ্যমকে কোটা বলে। এই কোটার মাধ্যমে রাষ্ট্রের নির্দিষ্ট কিছু সুযোগ সুবিধা ভোগ করা যায়। যার মাধ্যমে কোনো পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে।পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কোটার প্রচলন রয়েছে। কোটার মাধ্যমে পড়াশুনা ,চাকুরী ,প্রমোশন ছাড়াও রাষ্ট্রের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ভোগ করা যায়।

ইংরেজদের শাসনামলে ভারতীয়দের জন্য কোটা বরাদ্দ ছিল। পরবর্তীতে মুসলিমরা পিছিয়ে পড়ায় তাদের জন্য কোটা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর পর দেশ ভাগের পর প্রাদেশিক কোটা চালু করা হয়। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের চাকুরীর ক্ষেত্রে প্রথম কোটা যুক্ত করা হয়।

বাংলাদেশে কোটা পদ্ধতি কি ?

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে মহান মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে তাদের এগিয়ে আনার জন্য কোটা প্রথা চালু করা হয়। পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য এরপর মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিদের জন্য এই কোটা বরাদ্দ করা হয়। এর সাথে নারী কোটা, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কোটা এবং শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ওটা কোটা বরাদ্দ করা হয়।

গত ২৩ জুলাই কোটা আন্দোলনের কারণে সরকার নতুন কোটা পদ্ধতি জারি করে। নতুন কোটা প্রজ্ঞাপন অনুসারে মেধার ভিত্তিতে সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্ত শাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত চাকুরীর ক্ষেত্রে ৭ শতাংশ কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাকি ৯৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। এই ৭ শতাংশ কোটার মধ্যে পাঁচ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের জন্য, এক শতাংশ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের জন্য এবং বাকি এক শতাংশ শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে।

নতুন কোটা পদ্ধতি জারি করার পূর্বে বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি চাকরি খাতে ৫৬ শতাংশ কোটা বরাদ্দ ছিল। যার মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি নাতনিদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা বরাদ্দ ছিল। বর্তমানে নতুন কোটা প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি নাতনিদের কোটা বন্ধ করা হয়েছে।

সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি

গত ২৩ জুলাই কোটা আন্দোলনের কারণে সরকার নতুন কোটা পদ্ধতি প্রজ্ঞাপন জারি করে। নতুন কোটা প্রজ্ঞাপন অনুসারে মেধার ভিত্তিতে সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্ত শাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত চাকুরীর ক্ষেত্রে ৭ শতাংশ কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাকি ৯৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

নতুন কোটা পদ্ধতির প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে-

১. ৯৩ শতাংশ মেধা।
২. ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান।
৩. ১ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী।
৪. ১ শতাংশ শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের জন্য।

বি: দ্র: মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিদের জন্য কোন কোটার ব্যবস্থা রাখা হয়নি। তবে নতুন কোটা প্রজ্ঞাপন জারি করার পূর্বের সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে পূর্বের নিয়ম বহাল থাকবে।

কোটা কত পার্সেন্ট?

১৯৭২ সালের বাংলাদেশের সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে প্রথম কোটা প্রথা চালু করার পর থেকে ৫৬ পার্সেন্ট কোটা বরাদ্দ রাখা হয়। বাকী ৪৪ পার্সেন্ট মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়ার প্রথা ছিল। কিন্তু গত ২৩ জুলাই সুপ্রিম নতুন কোটা প্রথা জারি করার পর কোটা ৫৬ পার্সেন্ট থেকে ৭ পার্সেন্ট এ নামিয়ে আনা হয়। বাকি ৯৩ পার্সেন্ট মেধাবৃত্তিতে যাচাই-বাছাই করে নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

নতুন কোটার প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে- ৯৩ শতাংশ মেধা, ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, ১ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী, ১ শতাংশ শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের জন্য।

মুক্তিযোদ্ধা কোটা কত পার্সেন্ট?

১৯৭২ সাল থেকে মুক্তিযোদ্ধা, তাদের সন্তান ও নাতি-নাতনিদের জন্য সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে সরকারি, আধা সরকারি ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৩০ শতাংশ কোটা বরাদ্দ ছিল।

কিন্তু ২৩ জুলাই ২০২৪ সুপ্রিম কোট কর্তৃক নতুন কোটা পদ্ধতির প্রজ্ঞাপন জারি করার মাধ্যমে ৩০ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশে নিয়ে আসা হয় এবং মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিদের জন্য কোটা বাতিল ঘোষণা করা হয়।

প্রতিবন্ধী কোটা কত পারসেন্ট?

২৩ জুলাই ২০২৪ তারিখে জারি করা নতুন কোটা পদ্ধতির প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত/ আধা স্বায়ত্তশায়িত প্রতিষ্ঠান, স্বশাসিত ও সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষ এবং বিভিন্ন কর্পোরেশনের চাকুরীতে নিয়োগের জন্য শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ কোটা বরাদ্দ করা হয়েছে ।

One Comment on “নতুন কোটা পদ্ধতি ২০২৪”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *