নগদ একাউন্ট কিভাবে খুলতে হয়? বাটন মোবাইলে নগদ একাউন্ট খোলার নিয়ম সমূহ নিয়ে কথা বলবো। তাছাড়া নগদ এক ধরনের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা। যার মাধ্যমে টাকা লেনদেন বিল, বিলের লেনদেন, কেনাকাটা ইত্যাদি করা যায়। ২০১৮ সালে এর যাত্রা শুরু হয়।এটি এমন এক ধরণের ব্যাংকিং সিস্টেম বাংলাদেশে বিকাশের মতোই জনপ্রিয় কারণ এতে ভালো সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।
অনেক ক্ষেত্রে বিকাশের থেকেও এতে সুযোগ সুবিধা বেশি পাওয়া যায়। খুব সহজেই কোন ঝামেলা ছাড়া নগদ একাউন্ট খোলা যায়। ঘরে বসেই নগদ একাউন্ট খোলা যায়। এটি মূলত বাংলাদেশ সরকারের ডাক বিভাগের একটি প্রতিষ্ঠান । তাই এটি খুবই নিরাপদ মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম।
অনলাইনে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২৪
নগদ কি?
নগদ বাংলাদেশের নগদ মূলত বাংলাদেশ সরকারের ডাক বিভাগের একটি অর্থনৈতিক সেবা। এটি মূলত এক ধরনের মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম, ব্যাংকের ঝামেলা থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকার এই মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেমটি চালু করেন। বাজারে অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম থাকলেও, সার্ভিস চার্জ অনেক বেশি। এর তুলনায় নগদের সার্ভিস চার্জ খুব কম তাই এটি খুব কম সময়ের মধ্যে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বড় বড় লেনদেন সাধারণত সাধারণ মানুষ এই অ্যাপ দিয়ে করে থাকেন।
নগদ একাউন্ট কেন খুলবো?
অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম বিকাশ, উপায় এগুলোর চেয়ে নগদে প্রচুর সুবিধা রয়েছে। নগদে সার্ভিস চার্জ সব থেকে কম হাজারে ৯ টাকা কাটা হয়। এই অ্যাপ দিয়ে আরো কিছু সুবিধা পাওয়া যায়। সেগুলো নিচে আলোচনা করা হলো:-
- টাকা পাঠানো- নগদ একাউন্টে সব থেকে কম খরচে টাকা পাঠানো যায়।
- টাকা উঠানো- নগদ একাউন্ট দিয়ে খুব সহজে কম খরচে টাকা উঠানো যায়।
- টাকা জমা- নগদ একাউন্টে টাকা জমা রাখা যায়।
- কেনাকাটা করা- নগদ একাউন্টের মাধ্যমে অনলাইন থেকে প্রোডাক্ট খুব সহজে কেনাকাটা করা যায়।
- বিল পরিশোধ-নগদ একাউন্টের সাহায্যে খুব সহজে কোন রকম ঝামেলা ছাড়াই বিদ্যুৎ বিল গ্যাস বিল পানির বিল ইত্যাদি সব ধরনের বিল পরিশোধ করা যায়।
- মোবাইল রিচার্জ- নগদ একাউন্টের মাধ্যমে মোবাইলের রিচার্জ করা যায় এবং বিভিন্ন ধরনের অফার পাওয়া যায়।
- অফার- নগদ একাউন্টে বিভিন্ন উপলক্ষে অফার দিয়ে থাকে অফারগুলো বিভিন্নভাবে কার্যকর হয়ে থাকে।
নগদ একাউন্ট কিভাবে খুলবো
নগদে সাধারণত তিন ধরনের অ্যাকাউন্ট খোলার সুবিধা রয়েছে নগদ পার্সোনাল একাউন্ট, নগদ এজেন্ট একাউন্ট এবং নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট।
- পার্সোনাল একাউন্ট-নগদ পার্সোনাল একাউন্ট এক ধরনের ছোট ব্যাংক। যার মাধ্যমে আপনি ব্যাংকের সকল সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়। এ একাউন্টের মাধ্যমে দেশের যেকোনো জায়গা থেকে টাকা উত্তোলন করা যায় এই একাউন্টে সর্বোচ্চ তিন লক্ষ টাকা রাখা যায়।
- এজেন্ট একাউন্ট- যারা এজেন্ট একাউন্ট খোলেন তারা মূলত কোম্পানির প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। তারা মূলত স্থায়ীভাবে গ্রাহকদের বিভিন্ন সেবা প্রদান করে টাকা উপার্জন করেন।
- মার্চেন্ট একাউন্ট- এই অ্যাকাউন্ট মূলত খোলা হয় বড় বড় ট্রানজিশন এর জন্য অর্থাৎ যারা অনেক টাকার লেনদেন করেন তাদের জন্য এই একাউন্ট অনেক সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে।
পার্সোনাল একাউন্ট এর সুবিধা
পার্সোনাল একাউন্ট এক ধরনের ছোট ব্যাংক। যার মাধ্যমে আপনি ব্যাংকের সকল সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়। এ একাউন্টের মাধ্যমে দেশের যেকোনো জায়গা থেকে টাকা উত্তোলন করা যায়। এই একাউন্টে সর্বোচ্চ তিন লক্ষ টাকা রাখা যায়। এই অ্যাকাউন্ট খুলতে জাতীয় পরিচয় পত্র, ঠিকানা,নাম. ছবি ইত্যাদি প্রয়োজন হয়। এর লিমিট অনেক কম তাই সাধারণ মানুষ এ ধরনের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে থাকেন।
নগদ পার্সোনাল অ্যাকাউন্ট খোলার নিয়ম
নগদ পার্সোনাল অ্যাকাউন্ট দুইটি ধাপে দুটি পদ্ধতিতে খোলা যায় নগদ অ্যাপ দিয়ে খোলা যায় আবার অ্যাপ ছাড়াও খোলা যায়।
বাটন মোবাইলে নগদ একাউন্ট খোলার নিয়ম
*১৬৭# দিয়ে নগদ একাউন্ট কিভাবে খুলবো?
- মোবাইলে ডায়াল অপশনে গিয়ে *১৬৭# ডায়াল করুন।
- পিন সেট করুন।
- পিনটি নিশ্চিত করুন এবং
- জমাকৃত টাকার উপর কোন মুনাফা পেতে চান কিনা তা ঠিক করুন।
অ্যাপের মাধ্যমে নগদ একাউন্ট খোলার পদ্ধতি
প্রথমে GOOGLE প্লে স্টোর থেকে নগদ অ্যাপটি ডাউনলোড করে ইন্সটল করুন।

অ্যাপটি ওপেন করুন এবং ”রেজিস্ট্রেশন করুন” বাটনে ক্লিক করুন।

আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের সামনের অংশ স্ক্যান করুন তারপর জাতীয় পরিচয় পত্রের পিছনের অংশ স্ক্যান করুন।

অনুমতি দিতে ”Allow” বাটনে ক্লিক করুন

আপনার সকল তথ্য যেমন আপনার নাম, জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার,পিতার নাম, মায়ের নাম, জন্ম তারিখ, বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা গুলো যাচাই করুন। তথ্যগুলো ঠিক আছে কিনা ভালোভাবে যাচাই করুন যাচাই করা হলে ”পরবর্তী” বাটনে ক্লিক করুন।

অন্যান্য তথ্য যেমন লিঙ্গ, লেনদেনের উদ্দেশ্য, পেশা এবং মুনাফা গ্রহীতা একাউন্ট এর অপশন গুলো পূরণ করুন এবং যাচাই করুন এরপর ”পরবর্তী” বাটনে ক্লিক করুন।

এবার ক্যামেরার সাহায্যে নিজের ছবি তুলুন। ছবি তোলার জন্য মুখে চোখে চশমা থাকলে তা খুলে ফেলুন। কয়েকবার চোখের পলক ফেলুন। চেহারা এবং ক্যামেরা স্থির রাখুন। চোখের পলক ফেলার পরেই ছবি তোলা হয়ে যাবে।

আমি নগদ এর ”শর্তাবলীর সাথে একমত” বাটনে ক্লিক করুন এবং স্বাক্ষর করুন।

তথ্য পুনরায় যাচাই করুন


নাম্বার ভেরিফিকেশন এর জন্য OTP দেওয়া হবে ১ মিনিটের মধ্যেই লিখতে হবে ওটিপি সঠিকভাবে যাচাই হলে আপনার মোবাইল নাম্বারটি ভেরিফিকেশন হবে।

অতঃপর আপনার পিন সেট করুন এবং সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন।

‘সাবমিট” বাটন ক্লিক করলেই আপনি সরাসরি নগদ হ্যাপে চলে যাবে।

নগদ এজেন্ট একাউন্ট খোলার পদ্ধতি
যারা এজেন্ট একাউন্ট খোলেন তারা মূলত কোম্পানির প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। তারা মূলত স্থায়ীভাবে গ্রাহকদের বিভিন্ন সেবা প্রদান করে টাকা উপার্জন করেন।
নগদ এজেন্ট একাউন্ট পার্সোনাল একাউন্ট এর মত খোলা যায় না। এর জন্য আপনাকে তাদের অফিসে আবেদন করতে হবে। আবেদনের জন্য আপনার কিছু তথ্যের প্রয়োজন হয়। আবেদনের জন্য যেসব তথ্য প্রয়োজন
- জাতীয় পরিচয় পত্র। .
- ট্রেড লাইসেন্স।
- ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
উপরে উল্লেখিত তথ্যগুলো নিয়ে আপনাকে নগদের অফিসে উপস্থিত হতে হবে। এই তথ্যগুলোর মাধ্যমে আপনাকে নগদের এজেন্ট হওয়ার জন্য আবেদন করতে হবে।
নগদ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার পদ্ধতি
নগদ ব্যবসায়ীদের জন্য এক বিশেষ একাউন্টের ব্যবস্থা করেছে। যার মাধ্যমে তারা বিভিন্ন সুবিধা পেয়ে থাকে। এ সমস্ত অ্যাকাউন্ট কে মার্চেন্ট একাউন্ট বলে।এই অ্যাকাউন্ট মূলত খোলা হয় বড় বড় ট্রানজিশন এর জন্য অর্থাৎ যারা অনেক টাকার লেনদেন করেন তাদের জন্য এই একাউন্ট অনেক সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে।
নগদের মার্চেন্ট একাউন্ট মূলত সাধারণ একাউন্টের মতই খুলতে হয়। কিন্তু একাউন্ট খোলার মাঝপথে কিছু তথ্য প্রদান করতে হয়। সাধারণ অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে এগুলো না দিলেও হয় কিন্তু মার্চেন্ট একাউন্ট এর ক্ষেত্রে এসব তথ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ আপনাকে অবশ্যই ট্রেড লাইসেন্স ও অন্যান্য কাগজপত্রের ছবি তুলে আপলোড করতে হবে।

আপনাদের জিজ্ঞাসিত প্রশ্নের উত্তর
১. পিন ভুল হলে কি করব ?
উত্তর: সরাসরি নগদ এর কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করবেন।
২. নগদের কাস্টমার কেয়ারের নাম্বার কি?
উত্তর: নগদের কাস্টমার কেয়ারের নাম্বার ১৬১৬৭।